দেশে যাত্রা করলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সাংবাদিকদের নিয়ে গড়া নতুন সংগঠন টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি)।এই খাতের সাংবাদিকতার বিকাশ, উন্নয়ন ও গণমাধ্যম কর্মীদের কল্যাণে কাজ করবে সংগঠনটি। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) কার্নিভ্যাল হলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়।অনুষ্ঠানে ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন : গণমাধ্যমের সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা দিয়ে শুরু হয় আয়োজনটি। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল যুগে পা দিয়েছি। ফলে এখন এটিকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। ফলে যে বিজ্ঞাপনের কথা হচ্ছে, সেখানে সামাজিক মাধ্যমগুলো আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছে।
যে অন্য মাধ্যম পারেনি। ফলে এখন বিজ্ঞাপন ভিন্ন মাধ্যমে যেতে শুরু করেছে। যেটা আমাদের চিহ্নিত করে কিভাবে সেটি ঠেকাবো এবং নিজেদের কাছে নিয়ে আসবো তা ভাবতে হবে।গোলটেবিল আলোচনার আগে বিষয়টি নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। তিনি বলেন, আমাদের এখনকার বিজ্ঞাপনের কথা ভাবতে হবে। এখন গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপনী ব্যয়ের কথা চিন্তা করলে তা দেখা যায় বেশিরভাগই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে খরচ হচ্ছে। তাই প্রথাগত বিজ্ঞাপন থেকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে ব্যয় কীভাবে কমানো যায় তা ভাবতে হবে। আর এতে কর কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে।বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অনলাইনে বিজ্ঞাপনে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়।
এমনকি মোট জনসংখ্যার দশ ভাগের মতো ডিজিটাল মাধ্যমে পণ্য ও সেবা গ্রহণ করছে। ফলে ক্ষেত্র যেমন প্রসারিত হচ্ছে তেমনি আমাদের বিষয়টি নিয়েও ভাবতে হবে জোরশোরে।টিএমজিবির আহ্বায়ক মুহম্মদ খানের স্বাগত বক্তব্যে শুরু হয় গোলটেবিল বৈঠকটি। এতে সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞ টিআইএম নূরুল কবীর।
প্যানেল আলোচনায় বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) সিনিয়র সহসভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, এখন বেশিরভাগ বিজ্ঞাপন চলে যাচ্ছে বিদেশে। তার অর্থ চলে যাচ্ছে দেশ থেকে।
আমাদের দেশীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করতে হবে। তা জনপ্রিয় করতে হবে যা চীন পেরেছে। সেটা করা গেলে ফেইসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের মতো মাধ্যমগুলো দেশ থেকে আর বিজ্ঞাপন নিয়ে যেতে পারবে না।মোবাইল ফোন সেবাদাতাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, ইউটিউব, গুগল, ফেইসবুকে দেওয়া বিজ্ঞাপনের টাকা তো বিদেশে চলে যাচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে। এতে করে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বিজ্ঞাপন দেশের বাইরে আর যাবে না।
অনুষ্ঠানে ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপনী বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকজন প্রশ্ন রাখেন আলোচকদের কাছে। বৈঠকের আলোচনা শেষে কেক কেটে টিএমজিবির পথ চলা শুরুর জন্য শুভকামনা জানান মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম খাতের বিশেষজ্ঞ, সংগঠক, ব্যবসায়ী-পেশাজীবী সংগঠনের নেতা, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ছিলেন।