করোনা মহামারীর কঠিন সময়ে সম্মুখসারিতে দায়িত্ব পালনের জন্য ‘অ্যামচ্যাম ফ্রন্টলাইন জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন কালের কণ্ঠের বিজনেস এডিটর মাসুদ রুমী। মহামারির প্রাদুর্ভাবকালে সম্মুখসারির সাংবাদিকদের কাজের স্বীকৃতি ও সম্মান জানাতে এই অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে দি আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচ্যাম)। গত ৭ আগষ্ট কালের কণ্ঠে প্রকাশিত ‘মেঘ কাটছে অর্থনীতির’ শীর্ষক প্রতিবেদনের জন্য তিনি এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
গতকাল রবিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের নাম ঘেষাণা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। অ্যামচ্যামের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ-এর সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার. মাস্টহেড পিআরের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউদ্দিন আদিল। অনুষ্ঠানে অ্যামচ্যামের সাবেক সভাপতি, নির্বাহী কমিটির সদস্যসহ অ্যামচেম ও মার্কিন দূতাবাসের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পেশাগত কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি দুবার পর্যটন সাংবাদিকতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের বিশেষ ফেলোশিপ; ২০১২ সালে মুম্বাইতে ওয়ার্ল্ড ব্র্যান্ড কংগ্রেসে সিএমও কাউন্সিল কর্তৃক ‘ওয়ার্ল্ড ব্র্যান্ড লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’সহ বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন। ২০০৯ সালের ১ জুলাই থেকে কালের কণ্ঠের সূচনার আগে থেকে মাসুদ রুমী কালের কণ্ঠে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি যায়যায়দিনসহ আরো কয়েকটি সংবাদপত্রে কাজ করেছেন। মেহেরপুরের মুজিবনগরের সন্তান মাসুদ রুমী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (অনার্স) এবং এমএসএস ডিগ্রী অর্জন করেছেন। সংবাদিকতায় তিনি দেশে বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। তিনি কালের কণ্ঠের এডিটরিয়াল বোর্ডের একজন সদস্য।
অনুষ্ঠানে জানানা হয়, অ্যামচেম ও মাস্টহেড পিআরের সাথে যৌথভাবে আয়োজিত এই অ্যাওয়ার্ড কর্মসূচীর আওতায় বিভিন্ন জাতীয় মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক ও টিভি ক্যামেরাপার্সনদের ১ মার্চ থেকে ৩১ আগস্ট ২০২০ তারিখের মধ্যে প্রকাশিত মহামারীর দুটি বিষয়ে প্রতিবেদন আহবান করা হয়। বিষয় দু’টি যথাক্রমে-জীবন ও জীবিকা এবং ব্যবসায় খাতে মহামারীর প্রভাব এবং করোনা মহামারীর প্রভাব, মানবিক পটভ‚মি। এরপর পেশাদার জুরি বোর্ডের মনোনায়নে অ্যাওয়ার্ডের জন্য চুড়ান্ত বিজয়ী নির্বাচিত করা হয়। বিজয়ীদের একটি সার্টিফিকেট, ক্রেস্ট এবং আর্থিক সন্মাননা দেওয়া হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘করোনা মহামারীর কারণে সারা বিশ্বেই সংবাদকর্মীরা মাঠে থেকে কাজ করছেন। তাদেরকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানা ধরণের ঝুঁকির মধ্যেই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এরপরও তারা দমে না গিয়ে গুজব এবং আতঙ্ক যেন সমাজে ছড়িয়ে না পড়ে, সেলক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি করোনা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সরকারকে নানাভাবে সহায়তা করছে।’
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতায় সরকার করোনা মোকাবিলায় সফলতা অর্জন করেছে। এই কারণে এখন আক্রান্তের হার ৪ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
করোনা মহামারীতে মারা যাওয়া ৪৩ জন সাংবাদিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বলেন, ‘সাংবাদিকরা মহামারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদেরকে স্বীকৃতি দেওয়ায় আমি অ্যামচ্যামকে ধন্যবাদ জানাই। আমেরিকান চেম্বার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে ভৃমিকা রেখে আসছে। আগের ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
১৯৮৮ সালে যাত্রা শুরু করা আমেরিকান বাংলাদেশ ইকনমিক ফোরামের নাম পরিবর্তিত হয়ে ১৯৯৬ সালে অ্যামচ্যাম করা হয়। মার্কিন দূতাবাস সংগঠনটির বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়তা দিয়ে আসছে। বাংলাদেশে কর্মরত আমেরিকাভিত্তিক বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এবং আমেরিকায় ব্যবসা করা বাংলাদেশি ব্যসসায়িদের সংগঠনটি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের প্রসারে কাজ করছে।